বশির আল–মামু, চট্টগ্রাম : চট্টগ্রাম নগরীর পতেঙ্গার টোলরোড এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রাইভেটকার উল্টে পাঁচজন আহত হয়েছেন। তারা হলেন- ইনান, ইউশা, বাপ্পি, সাবিক ও নাবিল। তাদের উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। শুক্রবার (১৮ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৭টায় সি-বিচ টার্নিং পয়েন্টে এই দুর্ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পতেঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জায়েদ মো. নাজমুন নুর।
তিনি বলেন, নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশের গার্ডারকে ধাক্কা দিলে প্রাইভেট কারটি উল্টে যায়। এতে আহত পাঁচজনকে উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
গ্যাস সংকটে পড়েছে চট্টগ্রাম নগরবাসী, শিল্পকারখানায় উৎপাদন ব্যাহত
বশির আল–মামু, চট্টগ্রাম : বন্দর নগরী চট্টগ্রামে গ্যাস সংকট দিন দিন চরম আকার ধারণ করছে। কয়েকদিন ধরে গ্যাসের তীব্র সংকট দেখা দেয়ায় ও সরবরাহ কমে যাওয়ায় মারাত্বক ভাবে ব্যাহত হচ্ছে মানুষের বাসা বাড়িতে এবং হোটেল রেস্টুরেন্টে রান্না-বান্না। চরম ভাবে ব্যাহত হচ্ছে শিল্প কারখানার উৎপাদন, সিএনজি রিফুয়েলিং স্টেশনের কমে গেছে সরবরাহ। এতে নগরীতে সিএনজি চালিত যানবাহনে সংখ্যা কমে গেছে। নগরীর বাকলিয়া, বহদ্দারহাট, বাদুরতলা, হালিশহর মুরাদপুরসহ অনেক বাসা বাড়িতে দিনের অর্ধেক সময় গ্যাস থাকছে না। গ্যাস সংকটে উৎপাদন কমে যাওয়ায় লোকসানে পড়তে হচ্ছে শিল্পকারখানা মালিকদের।
চট্টগ্রাম কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি সূত্র জানায়, চট্টগ্রামে প্রায় ৪৫০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের চাহিদা রয়েছে। এরমধ্যে মিলছে মাত্র ২৬০ থেকে ২৬৫ মিলিয়ন ঘনফুট। চাহিদার প্রায় অর্ধেক গ্যাস কম রয়েছে চট্টগ্রাম। যে পরিমাণ পাওয়া যাচ্ছে এরমধ্যে চট্টগ্রামের সার কারখানা কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (কাফকো) এবং চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেডে (সিইউএফএল) ৮২ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রে দেওয়া হচ্ছে ৩৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস। বাকিটা সরবরাহ করা হচ্ছে চট্টগ্রামের শিল্পকারখানা, সিএনজি ফুয়েলিং স্টেশন, বাণিজ্যিক এবং আবাসিকসহ সবগুলো খাতে। চট্টগ্রামে প্রায় ৭০টি সিএনজি ফিলিং স্টেশন রয়েছে। গ্যাস সল্পতার কারণে সিএনজি ফিলিং স্টেশন দৈনিক পাঁচ-ছয় ঘণ্টা গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রাখা হচ্ছে। বিশেষ করে স্টেশনগুলোতে সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত দৈনিক ৫ ঘণ্টা গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রাখা হচ্ছে। ’এ কারণে সিএনজি ফিলিং স্টেশনগুলোতে দীর্ঘ লাইন সৃষ্টি হচ্ছে।শিল্প কারখানায়ও চাহিদা মতো গ্যাস সরবরাহ করা যাচ্ছে না।’এ কারণে সিএনজি
চট্টগ্রামের হালিশহর এলাকার গৃহিণী তারেকুন নেছা জানান, সোমবার (১৪ নভেম্বর) থেকে ওই এলাকায় গ্যাসের সংকট দেখা দেয়। সকাল পৌনে ১০টায় গ্যাস বন্ধ হয়ে যায়। দুপুর দেড়টায় গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হয়। একইভাবে বিকালেও কয়েক ঘণ্টা গ্যাস থাকছে না। এ কারণে রান্নায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
গ্যাস সংকটের কথা জানিয়েছেন নগরীর বহদ্দার হাট আবাসিক এলাকার বাসিন্দ মাহবুবুর রহমান। তিনি জানান, এখানে গত কয়েকদিন ধরে গ্যাসের চাপ কমে গেছে। অনেক সময় চুলা জ্বলে মিটমিট করে। রান্না করা কষ্টকর হয়ে পড়ে। এছাড়া গ্যাস সংকট দেকা দিয়েছে বাকলিয়া থানার ডিসি রোডসহ নগরীর বিভিন্ন স্থানে।
কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড ইঞ্জিনিয়ার সার্ভিসেস অপারেশন ডিভিশনের মহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী আমিনুর রহমান বলেন, ‘চট্টগ্রামে সব মিলিয়ে ৪৫০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের চাহিদা রয়েছে। এরমধ্যে কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (কাফকো) এবং চিটাগং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেডে (সিইউএফএল) ৪১ মিলিয়ন ঘনফুট করে মোট ৮২ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে। অপরদিকে শিকলবাহা বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ৩৫ মিলিয়ন ঘনফুটসহ সরকারি এ তিনটি প্রতিষ্ঠানে মোট ১২০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে।’
চট্টগ্রামের বৃহত্তম ইস্পাত কারখানা কেএসআরএম’র সিনিয়র জিএম মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ‘গ্যাস ও বিদ্যুৎ সল্পতার কারণে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। উৎপাদন কমার আরও নানা কারণ রয়েছে। এদিকে ব্যাংকে এলসিও খোলা যাচ্ছে না। এ কারণে কাঁচামাল সংকট দেখা দিয়েছে। কাঁচামালের সংকটে উৎপাদন কমেছে। উৎপাদন কমে যাওয়ায় উৎপাদিত পণ্যের ওপর ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে। এ কারণে লোহার দাম বাড়ছে।’
চট্টগ্রাম মহানগর সিএনজি অটোরিকশা অটোটেম্পু মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক টিটু চৌধুরী বলেন, ‘সিএনজি রিফুয়েলিং স্টেশনগুলো সন্ধ্যায় থেকে ৫ ঘন্টা যানবাহনে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রেখেছে। তার ওপর দিনের অন্যান্য সময়েও বিদ্যুৎ না থাকায় গ্যাস নিতে সমস্যায় পড়তে হয়। এ কারণে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে যানবাহনে গ্যাস নিতে হচ্ছে।’
হালদায় বিষ দিয়ে মাছ শিকার ; একজনের কারাদন্ড
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : চট্টগ্রামের হালদা নদীতে বিষ দিয়ে করে মাছ শিকারের দায়ে আলমগীর নামে এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়। পরে তাকে ১ মাসের বিনা শ্রম কারাদন্ড দিয়েছেন হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহিদুল আলম। বৃহস্পতিবার (১৭ নভেম্বর) দিবাগত রাত ২ টার দিকে হালদা নদীর গড়দুয়ারা ইউনিয়নে হালদা রিসোর্স সেন্টারের পাশে গছালি খালের পশ্চিম পাশে বিষ প্রয়োগ করে মাছ শিকারের সময় তাকে আটক করা হয়।
ইউএনও শাহিদুল আলম বলেন, অভিযানের ভবর পেয়ে মাছ শিকারীরা দ্রত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। পরে ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ইস্কান্দার হোসেন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে অভিযুক্ত আলমগীরকে ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে যান। আমরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে অভিযোগের সত্যতা খুঁজে পাই। এ সময় তার কাছে বিষ দিয়ে শিকার করা বেশকিছু চিংড়ি পাওয়া যায় এবং তা জব্দ করা হয়।
তিনি আরও বলেন, ঘটনাস্থলে গড়দুয়ারা ইউনিয়নে পরিষদের চেয়ারম্যান সারোয়ার মোর্শেদ তালুকদার ও সংশ্লিষ্টদের উপস্থিতিতে অভিযুক্তের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে ১ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড দেওয়া হয় এবং সাজা পরোয়ানামূলে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।
Leave a Reply